জ্বর জ্বর এবং যে কারণে ঠাণ্ডা-জ্বর রাতে বাড়ে : এ জন্য প্রথমেই ওষুধ খাওয়া নয়, চেষ্টা করতে হবে ঘুমিয়ে পড়তে।
আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে জ্বর-ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, মাথাব্যথা ইত্যাদিতে কাবু হবেন অনেকেই।
এই ধরনের মৌসুমি অসুস্থতার কারণে অনেকেই হুট করে ওষুধ খেয়ে নেন।
তবে জার্মানির গবেষকরা জানাচ্ছেন ভিন্ন কথা। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে ওষুধ নয় বরং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অক্ষুণœ রাখতে প্রথমে যে কাজটি করা উচিত তা হলো ঘুমানো।
জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত এই গবেষণা-পত্রে গবেষকরা জানান, এই ধরনের মৌসুমি অসুস্থতায় প্রথমেই ওষুধ খাওয়া উচিত না।
গবেষণার জন্য ১০ জনকে পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। এদের মধ্যে পাঁচ জনকে একরাত জাগিয়ে রাখা হয়। আর বাকিদের স্বাভাবিক নিয়মে ঘুমাতে দেওয়া হয়।
দুই সপ্তাহ এমনটা চলার পর দুই দলের নিয়ম উল্টে দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে ১০ জনেরই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন গবেষকরা। তা থেকে পরিমাপ করা হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘টি সেল’য়ের মাত্রা।
ফলাফলে জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অফ টুবিগান’য়ের অধ্যাপক এবং এই গবেষণার প্রধান স্টোয়ান ডিমিত্রফ বলেন, ঘুমানোর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘টি সেল’য়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। আর ক্রমবর্ধমান ঘুমজনিত সমস্যার সমাধানে এই বিশেষ কোষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সে-কারণে যখনই শরীর দুর্বল লাগবে, মনে হবে অসুস্থ হতে পারেন তখনই ঘুমিয়ে পড়–ন। আর অফিসে থাকলে বসকে বলুন এখন আপনাকে ঘুমাতে হবেই।
আর,
যে কারণে ঠাণ্ডা-জ্বর রাতে বাড়ে
সাধারণভাবে বলা যায়, রাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ঘুমায়।
ঘুমের রুটিনের মতো রাতেও শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বিশ্রাম নেয়। আর এই কারণে দিনের চাইতে রাতের বেলা জ্বর ভোগায় বেশি।
চিকিৎসা-বিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্বর অবস্থায় দিনে শরীর ভালো থাকলে সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের প্রয়োজন হয় না।
দিনে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের সুরক্ষিত রাখে। তবে রাতে কম কার্যকর থাকার কারণে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ে। ফলে ভাইরাস ধ্বংস করতে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
চিকিৎসা-বিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘খনিকের জ্বর’ বলে।
এটা শুধু বিশ্রামের বিষয় নয়। পাশাপাশি সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শরীর সকল বিরূপ পরিস্থিতি ও অসুস্থতার সঙ্গে মোকাবিলার জন্য দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তুত হয়। মস্তিষ্কও অন্যান্য কাজে সক্রিয় থেকে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সাহায্য করে।
হালকা জ্বরের ক্ষেত্রেও দিনের বেলায় রোগী ভালো থাকেন। তবে রাত হলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। কারণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কম কার্যকর থাকায় শরীরকে একাই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হয়। ফলে তখন মনে হয় যে জ্বর বাড়ছে অথবা ওষুধে কাজ করছে না।