ঠাণ্ডা ও কফ নিরাময়

আজকের বিষয় : ঠাণ্ডা ও কফ নিরাময়। ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহারে এই সমস্যা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব। এ জন্য দরকার সচেতনতা ও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ। যেমন :

গরম ভাপ

ঠাণ্ডা এবং কফের সমস্যা হলে ভাপ বেশ উপকারী। একটি বড় বাটিতে গরম পানি নিয়ে ভাপ টেনে নিতে হবে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট এই ভাপ নেওয়া গেলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল বা মেনথল মিশিয়ে দিলে আরো উপকার পাওয়া যাবে।

মধু

ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারইজারের কাজ করে মধু। তা ছাড়া ঠা-া কফ সারাতেও দারুণ ঔষুধি গুণ রয়েছে এই উপাদানের। দিনে তিনবার খানিকটা মধু খেলে উপকার পাওয়া যাবে। পাঁচ বছরের উপরে যাদের বয়স তাদের জন্য মধুর সঙ্গে এক চামচ দারুচিনিগুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ালে বেশি উপকার হয়।

মালিশ

দুই বছরের ছোট শিশুদের জন্য মালিশ বেশ উপকারী। সরিষার তেলের সঙ্গে খানিকটা রসুন নিয়ে হালকা গরম করে ওই মিশ্রণ দিয়ে মালিশ করা যেতে পারে। বুকে, পিঠে এবং গলায় এই তেল দিয়ে মালিশ করতে হবে। তা ছাড়া শিশুর হাতের তালু এবং পায়ের তালুতেও হালকা মালিশ করতে হবে

পানি পান

কাশি এবং কফের সমস্যায় শরীরে প্রচুর পানির প্রয়োজন। নিয়ম করে পানি পান করতে হবে। এতে সাধারণ ঠাণ্ডার সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে। তা ছাড়া হালকা গরম পানি পানে গলার খুসখুসে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। পানি ছাড়া গরম সুপ, তাজা ফলের রস ইত্যাদিও বেশ উপকারী।

লবণ পানি দিয়ে গারগল

গলার ইনফেকশন বা প্রদাহে কুসুম গরম পানিতে খানিকটা লবণ মিশিয়ে গারগল করা বেশ উপকারী। তা ছাড়া গলা ব্যথা কমাতেও এটি সাহায্য করে। দিনে দুবার গারগল করলে উপকার পাওয়া যাবে।

হলুদ মিশ্রিত দুধ

হলুদে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যা বিভিন্ন ভাইরাস জনিত ইনফেকশন সারাতে কার্যকর। গরম দুধের সঙ্গে খানিকটা হলুদগুঁড়া মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করা যেতে পারে। সর্দি ও গলা ব্যথায় এই দুধ অত্যন্ত উপকারী। তা ছাড়া দুধের ক্যালসিয়াম শক্তি জোগাবে এবং সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

কফ নিরাময়ের আরো কয়েকটি পদ্ধতি

লেবু ও মধু

এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। প্রতিদিন দু’তিনবার এই পানীয় খেতে হবে। মধু বুক ও গলায় আরাম দেবে আর লেবুর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।

গরম দুধ

গরম দুধে মধু, হলুদ, গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া বুক কফ জমা ও সর্দি-কাশি সারাতে অত্যন্ত উপকারী। হলুদে আছে ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণ রোধকারী উপাদান, গোলমরিচ হজমে সাহায্য করে, সারায় কফ ও সর্দি। প্রতিদিন দু’বার পান করতে হবে।

কুসুম গরম পানি পান

ঠাণ্ডা লাগলে কুসুম গরম পানি পান করলে গলায় আরাম হয়। বুকে জমা কফও সেরে উঠতে থাকে ক্রমেই। শ্বাসনালী ও বুকে জমে থাকা সর্দি গলিয়ে ফেলতে কুসুম গরম পানি অত্যন্ত কার্যকর।

চা

আদা, পুদিনা-পাতা, ক্যামোমাইল, রোজমেরি মিশিয়ে চা বানিয়ে পান করাও এক্ষেত্রে বেশ উপকারী। চিনির বদলে মধু ব্যবহার করলে মিলবে বাড়তি উপকার। চা ভালো না-লাগলে আদা চিবিয়ে খেতে পারেন।

ব্ল্যাক কফি

অস্বস্তি থেকে সাময়িক আরাম মেলে ব্ল্যাক কফি পান করলে। আর জমে থাকা সর্দি গলাতেও উপকারী। তবে দিনে দুই কাপের বেশি পান করা যাবে না, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

হলুদ

গরম পানিতে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে গড়গড়া করলে বুকে কফ জমা থেকে মুক্তি মিলবে। কারণ হলুদে থাকা ‘কারকিউমিন’ জমে থাকা সর্দি কাটাতে কার্যকর। আর ব্যাকটেরিয়া নিধনেও হলুদ সহায়ক ভূমিকা রাখে।

পেঁয়াজের নির্যাস

এতে থাকা ‘কুয়ারসেটাইন’ সর্দি দূর করে এবং আবার জমতে বাধা দেয়, সংক্রমণ থেকেও বাঁচায়। পেঁয়াজের রস বের করে তাতে লেবুর রস, মধু ও পানি মিশিয়ে নিতে হবে। পরে কুসুম গরম করে পান করতে হবে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার।

তবে ঘরোয়া এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহারের আগে উপকরণগুলোতে ব্যক্তিগত সমস্যা আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

—বাঙালিয়ানা স্বাস্থ্য ডেস্ক

Share us

Leave a Reply

Your email address will not be published.